ঈমান কি? কাকে বলে? ঈমানের পূর্ণাঙ্গ আলোচনা
ঈমান কি কাকে বলে
ঈমান বলতে কি বুঝায়?
আপনাকে জানতে হবে ঈমান কি এবং ঈমান বলতে কী বোঝায় ? মূলত কালেমায়ে তাইয়্যেবা এবং কালেমায়ে শাহাদাত এর মর্ম অন্তর দিয়ে মেনে নিয়ে মুখে উচ্চারণ এবং কর্মে পরিণত করাকে ঈমান বলে
কালেমায়ে তাইয়্যেবা এর আলোচনা
لا اله الا الله محمد رسول الله
যার অর্থ হলো: আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল
কালেমায়ে শাহাদাত এর আলোচনা
اشهد ان لا اله الا الله واشهد ان محمدا عبده ورسوله
যার অর্থ হলো: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা’আলার বান্দা এবং রাসূল
ঈমান কাকে বলে?
কালিমায়ে তাইয়্যেবা এবং কালেমায়ে শাহাদাত এর উপর ঈমান আনার পর যেসব বিষয়ের মোটামুটি স্বীকৃতি দিতে হয় তাকে বলা হয় ইসলামী আকাইদ অথবা ঈমান
ঈমানের মূল বিষয় কয়টি ও কি কি?
ঈমানের মূল বিষয় ছয়টি:
- আল্লাহর ব্যক্তিসত্তা ও গুনাবলির ওপর ঈমান
- আসমানী ফেরেশতাদের উপর ঈমান
- রাসূলগণের প্রতি ঈমান (উল্লেখযোগ্য খতমে নবুয়তের প্রতি ঈমান সহ)
- আসমানী সকল কিতাব সমূহের উপর ঈমান
- আখেরাত তথা কেয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান
- তাকদীর তথা ভাগ্যের উপর ঈমান
এ ছ’টি আকিদা প্রকৃতপক্ষে ঈমানের ছয়টি অংশ এ সবের মধ্যে পারস্পারিক গভীর ও অনিবার্য সম্পর্ক আছে
এসবের কোনো একটিকে মেনে নিলে অন্য সব কয়টি কে মেনে নিতে হয় এবং কোন একটিকে অস্বীকার করলে সেগুলো কে অস্বীকার করা হয়।
ঈমান কাকে বলে
ঈমানের প্রকৃত অর্থ
ঈমানের প্রকৃত অর্থ এই যে এসব গুলোকে অন্তর দিয়ে মেনে নেয়া কেউ যদি এসবের মধ্যে কোন একটিকে মেনে নিতে অস্বীকার করে তাহলে তাকে কিছুতেই মুমিন বলা যাবে না
ঠিক তেমনি সেও মুমিন নয় যে ইসলামের এস টি আকিদার অতিরক্ত কোন নতুন আকিদা নিজের পক্ষ থেকে ঈমানের অংশ বলে মনে করে এবং ঈমানের জন্য তা প্রয়োজনীয় মনে করে
আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর উপর ঈমান
ঈমানের আলোচনা 1
এই যে বিরাট বিশাল প্রকৃতি জগত তার মধ্যে অসংখ্য সৌরজগৎ আছে এ ধরনের আরো বহু যোগ্যতা আছে তাদের মধ্যে
বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থাপনা ও আছে এসব কত বিশাল তা আমাদের কল্পনার অতীত এসব সৃষ্টি হঠাৎ করে ঘটনাক্রমে অস্তিত্ব লাভ করেনি
বহু বছর যাবত বস্তুর স্বাভাবিক এসব সৃষ্টি নয় বরং আল্লাহ তাআলার আপন ইচ্ছায় ও নির্দেশ বিশেষ পরিকল্পনার ভিত্তিতে এসব সৃষ্টি করেছেন
তিনি এসবের প্রকৃত মালিক তিনি তাঁর অসীম কুদরতে এসব কায়েম রেখেছেন এবং যতদিন ইচ্ছা কায়েম রাখবেন
ঈমানের আলোচনা 2
প্রকৃতি রাজ্যের প্রতিটি বস্তুর স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা এমন কোন কিছু নেই যা তার দ্বারা সৃষ্টি না হয় আপনাআপনি অস্তিত্বে এসেছে
প্রতিটি বস্তুর অস্তিত্ব ও স্থায়ীত্ব তার ওপর নির্ভরশীল তিনি সকলের প্রতিপালক তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে রক্ষা করেন এবং যাকে ইচ্ছা ধ্বংস করেন
ঈমানের আলোচনা ৩
তিনি অনাদিকাল থেকে আছেন এবং অনন্ত কাল পর্যন্ত থাকবেন তিনি চিরঞ্জীব ও চির শাশ্বত তার ধ্বংস নেই
ঈমানের আলোচনা ৪
তিনি এক ও একক সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন তিনি সর্বশক্তিমান কেউ তার ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করতে পারে না
তার পিতা-মাতা ও নেই সন্তান সন্ততিও নেই স্ত্রী পুত্র পরিজন ভাইবোন জাতি-গোষ্ঠী কিছুই নেই
ঈমানের আলোচনা ৫
তিনি সকল বিষয়ে লা-শরীক তার সত্তার ও গুণাবলীতে অধিকারও এক্তিয়ারের কোন শরীক বা অংশীদার নেই তিনি আপনা আপনি অস্তিত্ববান তার অধিকার ও এখতিয়ারে সত্তা গুণাবলীতে কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী তাকে হতে হয় না
ঈমানের আলোচনা ৬
কোন কিছুই তার সাধ্যের অতীত নয় এমন কোন বিষয়ের কল্পনা করা যেতে পারে না যা করতে তিনি অক্ষম তিনি সকল প্রকারের বাধ্যবাধকতা অক্ষমতা ও দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে
তিনি সকল কল্যাণ এর উৎস যত পবিত্র নাম ও উৎকৃষ্ট গুণাবলী তা সবাই তার জন্য দোয়া করা তাকে স্পর্শ করতে পারে না তিনি পাক-পবিত্র এবং সকল দোষ ত্রুটির ঊর্ধ্বে
ঈমানের আলোচনা ৭
তিনি সমগ্র বিশ্ব প্রকৃতির একমাত্র বাদশা বা শাসক শক্তির উৎস তিনি প্রকৃতিতে একমাত্র তার ওই কর্তৃত্ব চলছে তার কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব প্রয়োগের ব্যাপারে তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন
তিনি ব্যতীত কর্তৃত্ব বা প্রভুত্ব আর কারো হতে পারে না তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কেউ নাই
ঈমানের আলোচনা ৮
তিনি সকল শক্তির আসল উৎস ও কেন্দ্র অন্য সকল শক্তি তার কাছে নগণ্য
বিশ্ব প্রকৃতিতে এমন কিছু নেই যা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিশ্বাস ফেলতে পারে তা সে মানুষ হোক ফেরেশতা
অথবা জিন হোক অথবা অন্য কোনো শক্তিশালী সৃষ্টি হোক প্রকৃতি রাজ্যের কোন বৃহত্তম গ্রহ অথবা দৃশ্য-অদৃশ্য
কোন শক্তি এনার্জি তারা যত বড় ও শক্তিশালী হোক তারা আল্লাহর অসীম কুদরত ও ক্ষমতার কাছে কিছু মাত্র নয়
ঈমানের আলোচনা ৯
তিনি সর্বত্র সর্বত্র বিরাজমান তিনি সর্বদ্রষ্টা প্রত্যেকটি বস্তু তিনি দেখতে পান চাষে ভূগর্ভে হোক অথবা অসীম আকাশের কোন স্থানে হোক তিনি ভবিষ্যৎ সম্পর্কে
অবহিত মানুষের মনের কথা তার অন্তরের অন্তস্থল ভাবধারা ও আবেগ অনুভূতি এবং সকল প্রকার গোপন রহস্য তার পুরোপুরি জানান
তিনি মানুষের কাঁধে শিরা-উপশিরা থেকেও নিকটে অবস্থান করেন তিনি পূর্বাপর সকল বিষয়ের জ্ঞান রাখেন গাছ থেকে
এমন কোন পাতা পড়ে না যা তাঁর জ্ঞানের বাইরে অথবা ভূখণ্ডে লুকায়িত এমন শস্য বীজ নেই যা তার জানা নেই
ঈমানের আলোচনা ১০
জীবন-মৃত্যু তার হাতে যাকে ইচ্ছা তাকে জীবন ও মৃত্যু দান করেন যাকে তিনি মারতে চান তাকে রক্ষা করার কেউ নেই এবং যাকে তিনি জীবিত রাখতে চান তাকে কেউ মারতে পারেনা
ঈমানের আলোচনা ১১
সকল সম্পদের একচ্ছত্র মালিকানা তার সম্পত্তি থেকে যাকে তিনি বঞ্চিত করতে চান তাকে কেউ কিছু দিতে পারে না যাকে তিনি দিতে চান
কেউ তাকে ঠেকাতে পারে না কাউকে সন্তান দান করা না করা সম্পূর্ণ তার একটি আরে যাকে ইচ্ছা তাকে পুত্রসন্তান দেন
যাকে ইচ্ছা তাকে কন্যা অথবা যাকে ইচ্ছা তাকে উভয়েই দেন আবার যাকে ইচ্ছা তাকে উভয় থেকে বঞ্চিত করেন তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার এতোটুকু ক্ষমতা নেই।
ঈমানের আলোচনা ১২
লাভ-লোকসান একমাত্র তার এখতিয়ারে তিনি কাউকে ক্ষতি অথবা বিপদের সম্মুখীন করতে চাইলে কেউ তা ঠেকাতে পারে না।
আর যদি তিনি কারও কল্যাণ করতে চান তাহলে কেউ তার কোন ক্ষতি বা অকল্যাণ করতে পারে না মোটকথা আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ কারো কোন কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে না
ঈমানের আলোচনা ১৩
একমাত্র কেবলমাত্র তিনি সকলের রিজিকদাতা রিজিকের চাবিকাঠি একমাত্র তারাই হাতে তিনি তার যাবতীয় সৃষ্টি সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত
সকলকেই তিনি নিজের দান করেন রুজি রোজগারের ব্যাপারে কমবেশি করা ও তার হাতে যার জন্য
তিনি যতটুকু নির্ধারিত করে রেখেছেন সে ততটুকু ঠিক মত পাবে এরকম বেশি করার অধিকার কারও নেই
ঈমানের আলোচনা ১৪
তিনি অত্যন্ত ন্যায় পরায়ণ তিনি বিংগো অসুস্থ বিচার সম্পন্ন তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত কারী তিনি কোন হকদারের হক নষ্ট করেন না
এবং কারো উপর জুলুম করেন না এ তার ন্যায়-নীতির খেলাপ যে – ভালো কাজ সম্পাদনকারী এবং দুষ্কৃতিকারী তার নিকটে সমান হবে
প্রত্যেককে তার আপন আপন কৃতকর্ম অনুযায়ী প্রতিদান দেন কোন অপরাধীকে তিনি তার অপরাধের অধিক শাস্তি দেন না
এবং নেক লোক কে তার যথোপযুক্ত পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করেন না তার একটি সিদ্ধান্ত তার পরিপূর্ণ জ্ঞান সুষ্ঠু বিচার বুদ্ধি ন্যায়ের হয়ে থাকে
ঈমানের আলোচনা ১৫
তিনি তার বান্দাহকে অত্যন্ত ভালোবাসেন তিনি গুনাহ মাফ করে দেন তওবা করে তওবা কবুল করেন
তিনি তাঁর বান্দাদের উপর সর্বদা রহমত বর্ষণ করে থাকেন তার রহমত মাগফিরাত থেকে মুমিনদের নিরাশ হওয়া উচিত নয়
ঈমানের আলোচনা ১৬
তিনি একমাত্র সত্তা যাকে ভালোবাসা যেতে পারে একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে তাকে ব্যতীত
আর কাউকে ভালবাসতে হলে তার ওই জন্য ভালবাসতে হবে তার ভালোবাসায় সকল ভালোবাসা কে নিয়ন্ত্রণ করে
ঈমানের আলোচনা ১৭
একমাত্র তিনিই আমাদের কৃতজ্ঞতা পাওয়ার হকদার সকল ইবাদত ও আনুগত্য পাওয়ার অধিকার একমাত্র তাঁরই।
তিনি ব্যতীত অপর কেউ না আনুগত্য লাভের অধিকারী হতে পারে আর না তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করা যেতে পারে
একমাত্র তার সামনেই সবিনয়ে দাঁড়ানো যেতে পারে তাকেই সেজদা করা যেতে পারে
তার কাছে এসব কিছু চাওয়া যেতে পারে তার কাছেই সবিনয়ে কাকুতি মিনতি করা যেতে পারে
ঈমানের আলোচনা ১৮
এ অধিকার একমাত্র তাঁর যে মানুষ তার আনুগত্য করবে তার আইন মেনে চলব নিরংকুশভাবে তার নির্ধারিত শরীয়তের বিধান মেনে চলবে
হালাল-হারাম নির্ধারণ করার অধিকার একমাত্র তাঁর এ ব্যাপারে কারো কনামাত্র অধিকার নেই
ঈমানের আলোচনা ১৯
একমাত্র তাকেই ভয় করতে হবে তার ওপরেই আশা-ভরসা রাখতে হবে প্রতিটি ব্যাপারে সাহায্য তার কাছে চাইতে হবে তাকেই মনের বাসোনা পূরণকারী
ত্রাণকর্তা অভিভাবক ও সাহায্যকারী মনে করতে হবে সকল ব্যাপারে তার ওপরে নির্ভর করতে হবে
ঈমান সম্পর্কিত আলোচনা ২০
হেদায়াত তার কাছে চাইতে হবে সুপথ দেখানো তার কাজ তিনি যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ পথ ভ্রষ্ট করতে পারেনা এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে কেউ সুপথে আনতে পারে না
ঈমানের আলোচনা ২১
কুফর শিরক নাস্তিকতা বিদআত প্রভৃতি ইহকাল ও পরকালের জন্য ধ্বংস নিয়ে আসে দুনিয়ার মধ্যে নিকৃষ্ট মানুষ তারাই
যারা আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে তার দিন কবুল করে না তার সাথে অন্যকে অংশীদার করে এবং তার আনুগত্য করার পরিবর্তে আপন প্রবৃত্তির আনুগত্য করে
ঈমান সম্পর্কে আলোচনা ২২ ঈমান কি কাকে বলে
কুফরি অবস্থায় যারা মৃত্যুবরণ করে তাদের উপর আল্লাহর লানত ফেরেশতাদের এবং সমগ্র মানবজাতির লানত
কুফর ও শিরক এর পরিণাম আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং তার ফলে চিরন্তন শাস্তি ভোগ করতে হবে
শিরক সুস্পষ্ট জুলুম এবং মিথ্যা
শিরক সম্পর্কে
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন:
ان الله لا يغفر ان يشرك به ويغفر ما دون ذلك لمن يساء
যার অর্থ হলো:-
অন্যান্য সকল গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিতে পারেন কিন্তু শিরকের গুনাহ কিছুতেই আল্লাহ মাফ করবেন না (সূরা আন নিসা 48)
*এখন পড়তে পারবেন ঈমানের মূল ভিত্তির ছয়টির দ্বিতীয় টি:-
তাকদীরের উপর ঈমান
চলুন তাহলে শুরু করি তাকদীরের আলোচনা ঈমান কি? কাকে বলে?
ভাগ্যের উপর ঈমান ১
তাকদীরের ও পরিমাণ বলতে গেলে আল্লাহ তাআলার সত্তার ও বালির গুণাবলীর উপর ঈমানের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ
এজন্য কোরআনে তার উল্লেখ করা হয়েছে হাদিসে অবশ্য হাদীসে এর গুরুত্বের দিকে লক্ষ করে একে ইসলামের স্থায়ী আকিদা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে
তাকদীরের ওপর ঈমানের প্রকৃত অর্থ এই যে বিশ্ব প্রকৃতির মধ্যে যা কিছু ভালোমন্দ আছে অথবা ভবিষ্যতে তা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়।
এবং সবই তাঁর জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত ভালো-মন্দের কোন সূক্ষাতিসূক্ষ তার জ্ঞানের বহির্ভূত নয় তার জ্ঞান প্রতিটি বস্তু কে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে।
ঈমান কি? কাকে বলে?
তাকদীরের উপর ঈমান
মানুষ দুনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ভালো কাজ করবে না মন্দ কাজ করবে তা তাঁর জন্মের পূর্বে থেকে আল্লাহর জানা আছে।
বিশ্ব প্রকৃতির কোন অনু পরিমাণ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গতিশীল ও ক্রিয়াশীল হতে পারে না। আর না কোনো বস্তু ও কার্যক্রম বা গতিশীলতা তার জ্ঞানের বাহিরে থাকতে পারে ।
আল্লাহ তা’আলা যার জন্য যা লিখে রেখেছেন তা খন্ডন করার এতোটুকু শক্তি কারো নেই তিনি কাউকে কোন কিছু থেকে বঞ্চিত করে থাকলে
তা দেবার ক্ষমতা ও কারণেই ভালো-মন্দ নির্ধারণ একমাত্র তারাই হাতে এবং মানুষের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের পূর্বনির্ধারিত।
বিশ্বনবী সাঃ এরশাদ করেন
كتب الله مقادير الخلائق قبله حي يخلق السماوات والارض بخمسين الفتنه قال وكان عرشه على الماء
আসমান জমিন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর আগে আল্লাহ তার সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন তিনি বলেন তখন আল্লাহর আরশ ছিল পানির উপর অর্থাৎ পানি ব্যতীত কোন সৃষ্টি তখন ছিল না ( মুসলিম 2653)
ঈমান কি কাকে বলে ৩
ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান
এক
ফেরেশতা আল্লাহ তায়ালার এক অনুভূতি সৃষ্টি এটা নূরের তৈরী এরা আমাদের দৃষ্টি বহির্ভূত তারা নারীও নয় পুরুষও নয় আল্লাহ তাদেরকে বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত রেখেছেন সে কাজ ওরা করে যাচ্ছে
দুই
ফেরেশতাগণ আপন মর্জি মতো কিছুই করেন না আল্লাহর শাসন ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রবর্তিত তাদের কোন অধিকার নেই তারা আল্লাহর এখতিয়ার বিহীন প্রজা
আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে যে আদেশ করা হয় তা দ্বিধাহীনচিত্তে পালন করার কাজে তারা লেগে যান তাদের এমন সাধ্য নেই যে তারা হুকুমের বিপরীত কিছু করেন
তিন
তারা সর্বদাই আল্লাহর স্তবস্তুতি করে থাকেন । না তারা আল্লাহর কোনো আদেশ লঙ্ঘন করেন আর না তারা আল্লাহর কোন সার্বক্ষণিক স্তবস্তুতিতে ক্লান্তি বোধ করেন।
চার
ফেরেশতাগণ সর্বদা আল্লাহর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকেন। আল্লাহর নাফরমানী অথবা বিদ্রোহের ধারণাও তারা করতে পারেন না।
পাঁচ- ঈমান কি কাকে বলে
যে কাজে তারা নিয়োজিত তা পরিপূর্ণ দায়িত্ব সহকারে সমাধা করেন। কর্তব্যে অবহেলা প্রদর্শন অথবা কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোন মনোভাব তাদের থাকে না।
ছয়
তাদের সংখ্যা কত তা আল্লাহ তায়ালাই জানেন।তবে চারজন অতি প্রসিদ্ধ এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করি তারা হচ্ছেন:-
ক. হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম
তার কাজ ছিল আল্লাহর কিতাব ও পয়গাম নবীদের নিকট পৌঁছানো সে কাজ শেষ হয়েছে এজন্য যে নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালাম ছিলেন সর্বশেষ নবী।
খ. ইসরাফিল আলাইহিস সালাম
তিনি কেয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে সিঙ্গায় ফুক দিবেন
গ. মিকাইল আলাইহিসালাম
হযরত মিকাইল আলাইহিসালাম বৃষ্টি বর্ষণ ও আল্লাহর সৃষ্টি জীবের প্রতি রিজিক পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করেন।
ঘ. আজরাইল আলাইহি সালাম
হযরত আজরাইল আলাইহি সালাম তিনি আল্লাহর হুকুমে প্রতিটি সৃষ্টি জীবের জীবন গ্রহণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।
তাকদীরের আলোচনা
সাত , ঈমান কি কাকে বলে
দুজন করে ফেরেশতা প্রত্যেক মানুষের সাথে থাকেন। একজন তাঁর ভালো কাজ এবং অন্যজন তার মন্দ কাজ লিপিবদ্ধ করেন। তাদেরকে বলা হয় কিরামান কাতিবিন অর্থাৎ সম্মানিত লেখকবৃন্দ।
দুজন ফেরেশতা মানুষের মৃত্যুর পর তার কবরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাদেরকে বলা হয় মনকির ও নাকির
ঈমান কি? কাকে বলে?
পরবর্তী আলোচনা পেতে এখানে ক্লিক করুন
ঈমান কি কাকে বলে ঈমানের পূর্ণাঙ্গ আলোচনা পর্ব 2
সম্মানিত ভিজিটর আপনাদের জন্য সকল তাফসীর গ্রন্থের লিংক দেওয়া হলো নিচে
সকল তাফসীর খন্ড পিডিএফ ফরমেটে পড়ুন
তাফসিরে জালালাইন সকল খন্ড পড়ুন
তাফসির ইবনে কাসির সব খন্ড পড়ুন
সুরা মুলক এর শানে নুযূল ফজিলত তাফসির সহ সমস্ত তথ্য
নফল নামাজ পড়ার সময় নিয়ম ও সুরা সহ সমস্ত তথ্য