শিরক কি? শিরকের ভয়াবহতা ও শিরক থেকে বাচার উপায় ও দোয়া সমূহ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতএব যে তার প্রভুর সাক্ষাৎ কামনা করে; সে যেন সৎকাজ করে এবং তার প্রভুর উপাসনায় কাউকে শরিক না করে।
আরও পড়ুন – সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া
প্রভুর সাক্ষাতের জন্য শুধু সৎকাজ করলেই হবে না বরং শিরকমুক্ত সৎকাজ করতে হবে। তা হতে পারে ছোট শিরক কিংবা বড় শিরক। এ সব শিরকের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাত কী বলেছেন বিশ্বনবি? এ সম্পর্কে করণীয়ই বা কী?
শিরক কি? শিরকের ভয়াবহতা
আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَمَنۡ كَانَ يَرۡجُوۡا لِقَآءَ رَبِّهٖ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلًا صَالِحًا وََّلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَۃِ رَبِّهٖۤ اَحَدًً
‘সুতরাং যে তার প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করতে চায়, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার প্রভুর ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (সূরা আল কাহফ : আয়াত ১১০)।
পেরেশানি ও ঋণ থেকে মুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন
ছোট বা বড় শিরক থেকে বাঁচতে এই দোয়াটি দিনে তিনবার পড়ুন।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি একটি বিষয়ে শিরক হওয়া থেকে এবং আমি জানি এবং আপনি যা জানেন না তার জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকাবিকা শায়ান ওয়া আনা আ’লামু ওয়া আস্তাগফিরুকা লিমা লা আ’লামু।’
সুরা মুলক এর শানে নুযূল ও ফজিলত পড়ুন
শিরকের ভয়াবহতা
রাসুলুল্লাহ (সা.) শিরকের ভয়াবহতা এবং তা থেকে বাঁচার উপায় হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তুলে ধরেছেন। তারপর-
1. হজরত মাহমুদ ইবনে লাবীদ (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের ব্যাপারে আমি সবচেয়ে বেশি ভয় পাই ছোট শিরক। সাহাবায়েকেরাম জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ছোট শিরক কি? তিনি বললেন, ‘রিয়া।’ (মুসনাদে আহমদ)
2. অন্য বর্ণনায় আছে, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ যখন তাঁর বান্দাদের কাজের প্রতিদান দেবেন, তখন তিনি মুনাফিকদের বলবেন, তাহলে দেখ তাদের জন্য তোমাদের কোনো প্রতিদান আছে কি না। কেননা আল্লাহ তায়ালা সম্পূর্ণরূপে অংশীদারদের উপর নির্ভরশীল। (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকী)
3. নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেন যে আল্লাহ বলেন, ‘আমি অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বাইরে। যে ব্যক্তি কোন নেক আমল করে এবং তাতে আমার সাথে অন্যকে শরীক করে, আমি সেই আমলটি অংশীদারের জন্য ছেড়ে দিই।
অন্য বর্ণনায়, আমি সেই আমল থেকে মুক্ত; তিনি যাকে আমার সাথে যুক্ত করেছেন আমি তার জন্য এটি করি। ‘(মুসলিম)
4. হজরত বদলা ইবনে উমর (রা.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, যে ব্যক্তি খ্যাতির জন্য ভালো কাজ করে, আল্লাহ তার সঙ্গে একই আচরণ করেন। ; ফলে সে ঘৃণা ও অপমানিত হয়। (মুসনাদে আহমাদ)
শিরক থেকে বাচার উপায় ও দোয়া
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘শিরক তোমাদের মধ্যে গোপনে প্রবেশ করে যেমন পিঁপড়ার নীরব নড়াচড়া। . আপনি দিনে তিনবার পড়বেন –
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকাবিকা শায়ান ওয়া আনা আ’লামু ওয়া আস্তাগফিরুকা লিমা লা আ’লামু।’
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার সাথে কাউকে শরীক করা থেকে আশ্রয় চাই। আমি জানা-অজানা (শিরক-গুনাহ) থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করি। ‘
তাই একজন মুমিন মুসলমানের উচিত ঘরের ভেতরে বা বাইরে যেকোনো কাজ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা। যখনই অন্য কেউ ভালো কাজের সাথে জড়িত হয়; তাহলে ছোট হোক বা বড় হোক শিরকের ভয় থাকে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ছোট বা বড় সকল শিরক থেকে সর্বদা দূরে থাকার তাওফীক দান করুন। হাদিস মেনে চলার তাওফিক দান করুন। শিরক থেকে বাঁচতে প্রতিদিন প্রিয় নবীর শেখানো দোয়া পড়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।