মালাকুল মাউত দেখতে কেমন। মালাকুল মউত যেভাবে জান কবজ করে।

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন-মালাকুল মউত যেভাবে জান কবজ করে

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন

মালাকুল মউত যেভাবে জান কবজ করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ সুন্দর পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। সৌরজগতের গ্রহ উপগ্রহ, সব মাখলুকাত, ইহলৌকিক জীবনের সব উপাদান এমনকি পারলৌকিক জীবনের সব কিছু তিনিই সৃষ্টি করেছেন।

আরও পড়ুন : সুরা মুলক এর শানে নুযূল ও ফজিলত 

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন। মালাকুল মউত যেভাবে জান কবজ করে

সৃষ্টিজগতের সব কিছুই মাখলুক আর সব মাখলুকের খালিক একমাত্র তিনিই। আর তিনিই হলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শুধু তাঁর ইবাদত বন্দেগির জন্য জিন ও ইনসান সৃষ্টি করেছেন।

জিন ও ইনসান তাঁরই বাধ্যগত হবে তাঁরই ইবাদত বন্দেগি করবে এটাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতাশা। পৃথিবীর সব প্রাণীর হায়াত সুনির্দিষ্ট ও সুনির্ধারিত। কোনো প্রাণীই তাঁর ইচ্ছার বাইরে জন্ম নেয়নি, আবার কোনো প্রাণীই তাঁর ইচ্ছার বাইরে মৃত্যুবরণও করবে না। তিনি প্রাণীদেহে রূহ তথা প্রাণের সঞ্চার করেন আবার তিনি নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতার মাধ্যমে প্রাণীদেহের ‘রূহ’ তথা প্রাণবায়ু কবজ করেন।

রূহ কবজকারী ফেরেশতাকে ‘মালাকুল মাউত’ বলে। মালাকুল মাউত নামের সম্মানিত এ ফেরেশতা মহান প্রভু আল্লাহপাকের নির্দেশনা মোতাবেক নির্দেশিত অবস্থানে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নির্ধারিত সময়েই রূহ কবজ করেন।

মালাকুল মাউত সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ গ্রন্থসমূহে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। যারা দুনিয়ার উপর আখিরাতকে প্রাধান্য দেয় কেবল তাঁরাই মালাকুল মাউতের কথা শুনে আঁৎকে উঠে, ভয়ে হৃদয় প্রকম্পিত হয়, তাঁরা আল্লাহপাকের রহমত প্রত্যাশা করে।

পবিত্র কুরআন ও হাদিসে মালাকুল মাউত প্রসঙ্গ : প্রাণীদেহের ‘রূহ কবজ’ করার প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা হলেন ‘মালাকুল মাউত’। কিন্তু তাঁর সহযোগী বহু ফেরেশতা আছেন। তাঁরা মালাকুল মাউতের নির্দেশে এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও, তোমাদের জান কবজের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ফিরে যাবে’ (সূরা সাজদাহ, আয়াত-৩২)।

আল্লাহপাক আরো বলেন, ‘যারা নিজেদের ওপর জুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফেরেশতারা বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে’? তারা বলে, ‘দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম’।

তারা বলে, ‘আল্লাহর জমিন কি এমন প্রশস্ত ছিল না যেখানে তোমরা হিজরত করতে?’ ‘এদেরই আবাসস্থল জাহান্নাম, আর এটা কত মন্দ আবাস! (সূরা নিসা, আয়াত-৯৭)।
তিনি আরো বলেন, ‘ফেরেশতারা যখন তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে প্রাণ হরণ করবে, তখন তাদের দশা কেমন হবে’ (সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত-২৭)।

আল্লাহ আরো বলেন, ‘বলো (হে নবী) তোমাদের জন্য নিযুক্ত মৃত্যুর ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অবশেষে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যাবে’ (সূরা আস সাজদা, আয়াত-১১)। ‘তিনিই স্বীয় বান্দাদের ওপর পরাক্রমশালী এবং তিনিই তোমাদের রক্ষক প্রেরণ করেন।

অবশেষে যখন তোমাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন আমার প্রেরিতরা তার মৃত্যু ঘটায় এবং তারা কোনো ত্রুটি করে না’ (সূরা আনয়াম, আয়াত-৬১)। উল্লিখিত আয়াতগুলোর আলোকে বোঝা যায়, প্রাণিজগতে ‘রূহ কবজকারী’ মালাকুল মাউতের সাথে বহু ফেরেশতা রয়েছেন।

মালাকুল মাউত সম্পর্কিত বিষয়টি স্পষ্টভাবে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- প্রখ্যাত সাহাবি বারা ইবনে আযিব রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘কবরে মৃত ব্যক্তির (মুমিনের) নিকট দু’জন মালাক (ফেরেশতা) আসেন।
অতঃপর মালায়িকাহ (ফেরেশতারা) তাকে বসিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তোমার রব কে? সে উত্তরে বলে, আমার রব হলেন আল্লাহ। তারপর মালায়িকাহ জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কী? সে ব্যক্তি উত্তর দেয়, আমার দ্বীন হলো ইসলাম।
আবার মালায়িকাহ জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ব্যক্তি প্রেরিত হয়েছিলেন, তিনি কে? সে বলে, তিনি হলেন আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ সা:।
তারপর মালায়িকাহ তাকে জিজ্ঞেস করেন, এ কথা তোমাকে কে বলেছে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি এবং তার উপর ঈমান এনেছি ও তাঁকে সমর্থন করেছি।’
তিনি (সা:) বলেছেন, ‘এটাই হলো আল্লাহ তায়ালার এ বাণীর ব্যাখ্যা- ‘আল্লাহ তায়ালা সেসব লোকদেরকে (দ্বীনের উপর) প্রতিষ্ঠিত রাখেন যারা প্রতিষ্ঠিত কথার (কালিমায়ে শাহাদাতের) উপর ঈমান আনে… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (সূরা ইবরাহিম ১৪ : ২৭।
অতঃপর রাসূল সা: বলেন, ‘আকাশমণ্ডলী থেকে একজন আহ্বানকারী ঘোষণা দিয়ে বলেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও।
আর তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। অতএব তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দেয়া হবে।’ রাসূল সা: বলেছেন, ‘ফলে তার দিকে জান্নাতের বাতাস ও সুগন্ধি দোলা দিতে থাকবে এবং দৃষ্টির শেষসীমা পর্যন্ত তার কবরকে প্রশস্ত করে দেয়া হবে।
অতঃপর রাসূল সা: কাফিরদের মৃত্যু প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বলেন, তারপর তার রূহকে তার শরীরে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে দু’জন মালাক এসে উঠিয়ে বসান এবং বসিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তোমার রব কে? তখন সে উত্তরে বলে, হায়! হায়! আমি তো কিছুই জানি না।
তারপর তারা তাকে পুনরায় জিজ্ঞেস করে, তোমার দ্বীন কী? সে বলে, হায়! হায়! তাও তো আমার জানা নেই। তারপর তারা জিজ্ঞেস করে, এ ব্যক্তি কে যাকে তোমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছিল? সে বলে, হায়! হায়! এটাও তো জানি না।
তারপর আকাশ থেকে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করে বলে, এ ব্যক্তি মিথ্যা বলেছে। সুতরাং তার জন্য আগুনের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে আগুনের পোশাক পরিয়ে দাও।
আর জাহান্নামের দিকে তার জন্য একটি দরজা খুলে দাও। সে অনুযায়ী তার জন্য দরজা খুলে দেয়া হয়।’
রাসূল সা: বলেন, ‘তার কবরকে তার জন্য সঙ্কুচিত করে দেয়া হয়, যাতে তার একদিকের হাড় অপর দিকের হাড়ের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর একজন অন্ধ ও বধির মালাক নিযুক্ত করে দেয়া হয়, যার সাথে লোহার এক হাতুড়ি থাকে।
সে হাতুড়ি দিয়ে যদি পাহাড়ের উপর আঘাত করা হয় তাহলে সে পাহাড় গুঁড়া গুঁড়া হয়ে মাটি হয়ে যাবে। সে অন্ধ মালাক এ হাতুড়ি দিয়ে সজোরে তাকে আঘাত করতে থাকে।
(তার বিকট চিৎকারের শব্দ) পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত জিন ও মানুষ ছাড়া সব মাখলুকই শুনতে পাবে। এর সাথে সাথে সে মাটিতে মিশে যাবে।
অতঃপর পুনরায় তার মধ্যে রূহ ফেরত দেয়া হবে। এভাবে অনবরত চলতে থাকবে (সুনানে আবি দাউদ-৪৭৫৩, সুনানে আহমাদ-১৮০৬৩)।

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন

উমাইয়া খলিফা হযরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি স্বীয় বন্ধুদের প্রতি হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালামের কাজ সম্পর্কে অসিয়ত নামায় নিম্নরূপ বর্ণনা উপস্থাপন করেন-

১. আমার কাছে এইমর্মে হাদীস পৌঁছেছে যে, (আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ ও সর্বকৌশলী) মালাকুল মাউত তথা হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম’র মাথা হলো আকাশে, তাঁর দু’পা ঠেকেছে জমিনে। সমগ্র পৃথিবী আযরাঈলের কাছে এত ছোট যেন কোন লোক একটি বাসন নিয়ে খানা খাচ্ছে।
২. আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম প্রতিটি লোকের প্রতিটি গৃহের প্রতি ছয়শত বার দৃষ্টিপাত করে।

৩. হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম দুনিয়ার মধ্যখানে দাঁড়ানো আছেন। তিনি এক নজরে দুনিয়ার জল, স্থল, পাহাড়, পর্বত সবকিছু একসাথে দেখেন।

৪. হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম-এর অনেক সাহায্যকারী ফিরিশতা আছেন, যাঁদের সংখ্যা আল্লাহ্ তা‘আলা ভালো জানেন।

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন

তাঁদের এক একজনের এমন হজমশক্তি আছে, যদি তাঁদের হুকুম করা হয় যে, আসমান-জমিন এক লোকমায় খেয়ে ফেলো, তাহলে একাই এক লোকমায় আসমান-জমিন হজম করে ফেলতে পারবে।

৫. অন্যান্য ফিরিশতা হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালামকে এমনভাবে ভয় পায়- যেমন ভয় পায় তোমাদের কেউ বনের হিংস্র পশু দেখে।

৬. হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম যদি আরশ বহনকারী কোন ফিরিশতার কাছাকাছি যান, তাহলে তাঁরা তাঁর ভয়ে লবনের মত গলে চুলের মত সূক্ষ্ম হয়ে যাবে।

মালাকুল মাউত দেখতে কেমন

৭. হযরত আযরাঈল আলায়হিস্ সালাম বনী আদমের রূহ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, নখ, চুল, রগ থেকে বের করে নিয়ে আসবে। রূহ এক গ্রন্থি থেকে অন্য গ্রন্থিতে পৌঁছলে মৃত্যুযাত্রীর কাছে তা একহাজার তলোয়ারের আঘাতের চেয়েও কঠিন মনে হবে।

মৃত্যুযাত্রীর একটি চুলের ব্যথা যদি আসমান জমিনে রাখা হয়, তাহলে আসমান-জমিন গলে যাবে। রূহ যখন কন্ঠদেশে পৌঁছে, তখন হযরত আযরাঈল আলায়হিস সালাম রূহকে ধরে ফেলে।

ঈমানদারের রূহ কব্জ করার পর সাদা রেশমী রুমালে তা রাখা হয়। যার সুগন্ধি অত্যন্ত চমৎকার ও ব্যাপকতর।
পক্ষান্তরে কাফিরদের রূহ কবজের পর তা কালো খসখসে মোটা পশমী কাপড়ে রাখা হয়, মনে হয় যেন রৌদ্রে শুকিয়ে ঠনঠনে করে রাখা হয়েছে।

ঐ রূহ থেকে মৃত জন্তুর (অসহ্যকর) দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। [ইমাম নববী (রাহ.) রচিত তায্কিরাহ্: পৃষ্ঠা ২৬]।

প্রিয় পাঠক আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত লেখা আর্টিকেল গুলো পড়ুন নিচের লিংকে ক্লিক করুন:

টেলিটক নাম্বার এমবি দেখার উপায় ২০২২। টেলিটক নাম্বার চেক কোড

এসি ঠান্ডা না কারণ/এয়ার কন্ডিশনিং হঠাৎ ঠান্ডা না হলে কি করবেন

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য উচ্চতা ও প্রস্থ কত ৪০ টি তথ্য Padma bridge

অনলাইন থেকে মাসে ৩০/৪০ হাজার টাকা ইনকাম করবেন যেভাবে 

জিপি ইন্টারনেট অফার 2022 – Gp Internet Offer 2022

কিছু নতুন ফোনের রিভিউ ও দাম জেনে নিনঃ

Xaomi Redmi Note 11S 5G Phone Revew  and price in Bangladesh 

Realme GT Neo 3T Review Price In BD রিয়ালমি নতুন ফোনের রিভিউ ও দাম জেনে নিন

Oppo Reno7 5G/ Find X5 Lite Review Price In BD

Previous Post Next Post